ধানসূত্র
[....বিভিন্ন লিটলম্যাগে প্রকাশিত হয়ে পরের বর্ণক্রম]ট
ধানের জমিনঘেঁষা ঘাসের জায়নামাজ। তাতেই সিজদা দেয় চাষী। মিনার, মসজিদ তার লাগেনা কিছু। পিছুটান নেই তার, আছে খড়ের গম্বুজ আর মনের মাজার। ধানের পূজারী সে, ধান তার লক্ষ্য আর লক্ষ্মী তার ধান। ধানের কাঠির বাঁশি প্রাণের কাঠিতে তার বেজে চলে বাণের পানির মতো, অবিরত, গত মৌসুমের। ধান ধর্মে বিশ্বাস তার, নিশ্বাস তার ঘাসের জায়নামাজে, বাজে, বাঁশের পাতার মতো, মাঝারী হাওয়ার। মাজারে দেয়ার মতো ধান নেই তার, আছে ধানের মাজার।ঠ
পেকেছে নতুন ধান ধূতরার বিলে। সেই ধান, সেই নব-অন্ন, অন্যের মুখে তুলে দিতে, মেতেছে নিরন্নপাড়া নবান্ন উৎসবে। শব-বাহকের মতো নিজেদের বয়ে চলা নিরন্নপাড়ার লোকজন, বয়ে চলে আজীবন ধান আর ধানের জীবন। মাঝে মাঝে উৎসবে মাতে, মাতোয়ারা হয়, মাতম করে, গত মৌসুমের পর নিরুদ্দেশ, দেশান্ন উৎসবে যাওয়া ধানের জন্য। তবু দেশান্ন উৎসবের অতিথি তারা হতে পারে না, পারে না আস্থাভাজন হতে দেশাচারের।
ড
কৃষাণের কাস্তের কাছে পরাজিত সমূহ সকাল। সমূহ দুপুর রোদের নূপুর হয়ে বাজে সোনালী ধানের ক্ষেতজুড়ে। ক্ষত সেরে যায় কৃষাণের, ধানের গোছায় আলগোছে চালায় সে কাঁচি। এই যে ধান, ধানের গোছার জীবনী, ভবিষ্যৎবাণীর মতো আগেই রেখেছিল জপে, জপমালায়, ধানবীজের তৈরি। মালীর মতোই ধানরেণুদের প্রতি ছিল মনযোগী। মনযোগ পেয়ে সেই তো পরাগ, রাগে-অনুরাগে বেড়ে ওঠে অন্ন শিরোনামে। শিরোমণি কৃষাণ তাহার। কিন্তু হঠাৎ কেউ একজন, কৃষাণের হাত থেকে কাস্তে নিয়ে, ধান কাটার অভিনয় করে, ছবি-টবি তুলে, সিনেমাসহ চলে যায় দূরের সংসদে। কৃষাণ তো এসবের বোঝেনা কিছুই। বোঝে, রাজনীতি মানে জেল-জুলুম আর খুনের তত্ত্ব।লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
![]() |
আহমেদ মওদুদ (জন্ম: ১৯৮১ সাল) |
তাঁর প্রকাশিত কবিতাবই: দেহের আড়ালে থেকে প্রকৃত স্বজন (২০০৯); দুঃস্বপ্নের চিরস্থায়ী বাগানের খন্ডচিত্র (২০১২); দুঃস্বপ্নের চিরস্থায়ী বাগানে (২০১৮)। এছাড়া কিশোর উপন্যাস: কিশোর (২০০৭); কবি (২০১৭)।
গবেষণা-পুস্তক: রংপুরের লোকছড়া (২০১৭)।
জীবনীগ্রন্থ: বিদ্যাসাগর (২০২০)।
1 মন্তব্যসমূহ
কবি আহমেদ মওদুদ এর কবিতা গতিপথ বদলে দিক বাংলা কবিতার জগত, শুভ কামনা
উত্তরমুছুন