বরই পাতার দেশ
অসুস্থ ভোরের মুখে দাঁড়িয়ে
ভাবি, কার কাছে যাবো!
বরই পাতার দেশ, উপ-দেশ
এ কেমন ঝরণাধারা?
জ্বরের মূর্ছনা! ভোর থেকে রাত।
কবরভূমিতে দাঁড়িয়ে
থাকে, অন্ধকার ফলানো
চুপচাপ গাছ।
মরহুম পাতাগুলি শুধু
আটকে তাকে জীবনের পরে।
সহজ বেদনা নিয়ে
অর্ঘ্যডালা জাগে
জ্বরের মৌনতা ভেদ করে।
উজ্জয়িনীকে
তামাক ফুলের দেশ — রসুনের বন
ক্লান্ত কুটোপণ্যের পসরা অথবা
নবীন মৃত্যুগন্ধা বিছানায়; কোথাও
থেকোনা লীন। এমনই কতোদিন
নদীফলের দেশে কতো মেয়ে ঢেউয়ের
চূঁড়ায় ভেসে — চলে গেছে দূর-তেপান্তর।
তোমারই মতো তারা ঘুমের ভেতরে নেমে এসেছিলো
বেড়ালের ডানা থেকে রূপোলী রাত্রিতে।
অচেনা ডাকাতেরা লুট করে গেছে
আমাদের
অগণিত
গোলাপী পাপড়ির মতো ভোর।
সেইসব বেদনা ফোটার দিনে একটা দূরাগত
প্রতীককে সঙ্গীতে রূপ দিতে দিতেই
অনাহুত দিনগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে!
লোকালয়ে
এত রক্তপাত ভেঙে — আধোলীন পথ ক'রে
কার কাছাকাছি যাবো, কার ঘুমের মধ্যে ঢুকে পড়বো,
কারই বা হৃদয় থেকে ছিঁটকে পড়বো তুমুল;
আলোড়িত শীতের সকাল!
বন্দুকের গভীর থেকে বেরিয়ে তোমার কাছে
ছুটে যাবো বলে ঘুম থেকে উঠি!
ইচ্ছে করছে প্রতিটি ভোরের কানে মুখ লুকিয়ে
বলি, সমূহ ঢেউ থেকে ছিঁটকে যাচ্ছে তুষারখ- মন।
পাড়ার মসজিদে মিনার থেকে মর্মতলে দীর্ঘ হাহাকারে
সকালভর্তি বেদনাদানা বিপুল আহ্লাদে ভেসে যাচ্ছে।
অনন্ত উন্মোচনের মধ্যপথে আশ্চর্য নিপুনতায় ভাঙা কাচ
লুকিয়ে ফেলছে পুরোনো প্রেমিকের জুতো।
তবু অলৌকিক পালকের মহিমাগাঁথা ধরে হাজির হলে
সমাধিমন্দিরে, আমি ভিন্ন উচ্ছ্বাসে লোকালয়ে ফিরে যাবো।
আগুন অথবা জলের অপেরা
চিরকাল, তুমি চোখের ভেতরে হামিংবার্ড পোষো—
হামিংবার্ড; ঋতুহননের কৌশল শেখা হলে
ক্রোধের বসন্ত জাগিয়ে সারাদিন, দাওয়ায় বসে
থাকো! —নাচের পুরনো মুদ্রা
আদিম কসরত থেকে ঝরে যায় অমীমাংসিত
আগুনের অপেরা। সফরকা- থেকে জলের
গভীর—নিম্নস্তরে প্রথম আকাশ দেখা যায় না।
নবান্ন
জিহ্বা অব্দি নবান্ন এসেছে নেমে
ঘূর্ণায়মান ছায়া সমূহ দেয়ালে;
—আছড়ে পড়তে কি বাকি!
রৌদ্র লুপ্ত নগরী বেরিয়ে আসে
আবেগে, মানুষের মতোই, যেন
নড়েচড়ে ওঠে। ফলত মরে যায়।
অগ্নিশিরাময়
কুয়াশা-সকাল চলে যাচ্ছে। নন্দনকাননে এত শিশির
কোথায় জমা হচ্ছে? প্রাচীন সমুদ্রঢেউ, বিশালাকার,
সমস্ত আঙুল আমি খরচ করেছি শরীরে তোমার।
দূর অন্ধকারে নির্লিপ্ত চোখ জানে। বিম্বশহরের
আরতি ঘেষে পরস্পর মিলনসূত্র আঁকে
জায়মান মরালী গ্রীবা।
সুরের কাঠামো
স্মরণ করছি ঢেউ, তুচ্ছের স্নান, অসমান
যথার্থ শুভ্রগান ভেঙে পড়ছে সমস্বরে।
ধেয়ে আসা অজগরের চিবুক ছুঁয়ে যাচ্ছে
বিগলিত সুর। সারিবদ্ধ শব্দের কাছে মাথা পেতে
বসে, সুরের কাঠামো থেকে উদ্ধার হতে চাই।
ᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬᕫᕬ
লেখক পরিচিতি:
![]() |
সাম্য রাইয়ান। জন্ম ৩০ ডিসেম্বর |
2 মন্তব্যসমূহ
কবিতাগুলো পড়ে আরাম পেলাম
উত্তরমুছুনধন্যবাদ কবি ভাই।
বন্দুকের গভীর থেকে বেরিয়ে তোমার কাছে
উত্তরমুছুনছুটে যাবো বলে ঘুম থেকে উঠি!- আহা, মন ভেঙে গেল কবি। এ কী শোনালেন!