লকডাউন
আর্ট পাখি ভালো উড়তে পারে
এতোদিন পাহাড়গুলো ভুল ছিলো;
রোহিঙ্গা শিবিরের কান্না
কেউ শুনছেনা...
দেয়ালঘড়ি কি শুধুই সময়প্রবাহ-
আন্দাজি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, রাষ্ট্রটা ভাঙ্গছেনা
বালের লকডাউন।
সর্বনাম
কাছে যেতে যেতে সর্বনামে জড়িয়ে পড়া ঈর্ষা,
কোথাও একটু মোচড়।
যে সর্বনামে বৃষ্টির পর, অচেনা সুদূরের গঞ্জ
থেকে ভেসে আসে মিষ্টি বাতাস...
আমাদের চিরচেনা সর্বনাম বড়ই অদ্ভুত,
তারানা তারিত অথৈ।
এজন্যই বলি পাণিনির ব্যাকরণটুকু বুঝে নিও,
যদি তুমি কখনো সম্বোধনে ভুল করো...
তখন সবকিছু থমকে পড়ে।
নেট আর নেটওয়ার্কের দুনিয়া অথবা অনলাইন
থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেই, বের হয়ে
চলে যাই অজানা অগন্তব্যের দিকে, যেখানে
প্রসব ব্যাথা নিয়ে অপেক্ষা ঝাঁকে ঝাঁকে -
পাখির দল, নিবিবন্ধ সময়ের মধ্যে ডুবে যেতে
থাকি, যেন আমাকে আর কেউ খুঁজে না পায়...
যে ব্যক্তিগত সর্বনামে সর্বস্ব জুড়ানো থাকে,
থাকে চুমু আর চুলের ঘ্রাণ, খড়খড়ি বেয়ে নেমে
আসা হাস্যজ্জ্বল রোদ্দুর, নিশ্চয়তার আলিঙ্গনে
ভরে ওঠা আগামিকালের দুনিয়া ;
মেঘরঞ্জনকে-
বলি আমাকে আর কখনো
মিথ্যা আশ্বাসে সর্বনামে জড়াবে না,
না চুমকি না ছোট, শুধু সর্বনামের ভেতর
পড়ে আছো বাদাবনে অজস্র সন্ধ্যাকাশের তারা,
সাত সকালে এখন আমি সেগুলো কুড়াতে যাবো
কুড়চি ফুলের সাথে, মালা গেঁথে গেঁথে একেকটা রুদ্রাক্ষরের মালা হয়ে উঠবে আজ।
কুমারীর চোখ
কুমার পাড়ার শান্ত দিঘির জলে
বনফুল বাঁশরি হয়ে ডুবে যাচ্ছিলো
আর আমি পাশ ফিরে দেখছিলাম
কুমারীর চোখ জলে ভেসে থাকা
ক্ষণরঞ্জনের পাশে চারুবাক হয়ে
মিশে আছে।
লিপি আক্তার
লিপি আক্তার হেঁটে হেঁটে টিউশন বাড়ি
ডাকঘর পেরুলেই বৃষ্টি
লোকে তাকে মৌনজল বলে
সেই জলে আয়োজন করে,
লিপি আয়োজন -
ভাসিয়ে দেয়ার।
লিপি চেপে ধরে,
লিপি মনে পড়েনা- বাবা মা।
মনে পড়ে পাঠ্যবইয়ের লাবণ্য,
চুরি হয়ে যাওয়া শিশুশৈশব, মায়ের সাথে নামতা
ছয় পায়ে হেঁটে হেঁটে দলছুট একা
পূর্বদেশে যায়, মৌলভী পাড়ার দিকে-
ফুপাতো ভাইকে রেখে এলাম হরবোলাদের গ্রামে
হেঁটে হেঁটে টিউশন বাড়ি...
সঙ্গীত মেশানো থাকে যে কোন বাঁকে।
রেহানাজল
রেহানাজলের দিকে- অতিশয় ডুবে যাচ্ছিলাম,
অনেক মাছ ও অন্যান্য যাবতীয় উৎসব নিয়ে
দূরবাহু ছড়িয়ে কি লাভ বলো,
যে নেমন্তন্ন ভুলে এখানে দাঁড়িয়ে আছি
কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল, মাথা নও করে-
সরল বাক্য ও ভাষা ভুলে যাবতীয়
বোধের আড়ালে থেকে যাবো,
এ আমার অগস্ত্যবিহার...
মৃণাল সন্ন্যাস থেকে উঠে এসে এইমাত্র-
আধ খাওয়া জিভ, আমাকে ফেলে দিতে চায়, মানুষের কোলাহলভর্তি
পৃথিবীর দিকে একবারো তাকাওনি,
লোহার পুলের উপর দিয়ে অনায়াসে
নেমে যাচ্ছিলো অস্তগামী সূর্য-
রেখে দেই সম্ভাষণ, যারা এসেছিল...
অধিকন্তু বিষয়াবলীর ভেতর বেবাক ভুলে যাওয়া এক আর্তলিপি পড়ে থাকে সেলাই করা ঠোঁটের কাছে-
বস্তুতঃ ঝুকে থাকা আলো কোনদিকে যাচ্ছে কিছুই বুঝা যাচ্ছেনা, জোৎস্নারাতের হাহাকার নেমে এলে-
মর্মরধ্বনির পাশে বিষাদের চিহ্ন এঁকে এঁকে
একেকটা গ্রামীণপথ তৈরি হয়ে যাচ্ছে-
কালো সুতায় ভরিয়ে দিচ্ছি শূন্য বোতামঘর
ভুল হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীটা...
স্বপ্নে বাঁচা
পোড়া মাটি, পাথরের গায়ে ফেলে আসা
রেখাগুলো ভালো করে, নতো হয়ে দেখো
কিছু একটা খুঁজে পাবে-
দক্ষিণাচাঁদের কথা, মৌন সন্ধ্যার কথা।
রানা প্লাজার কথা ভাবো-
মানুষ কাতর হলে কিভাবে পরষ্পর জড়িয়ে ধরে, বাঁচে।
হিংসা বাদ দাও, অহংকারগুলো গুটিয়ে ফেলো
দেখবে অনেককিছু সহজ হয়ে আসছে।
প্রেমপত্র লেখার কারণ এখন আর কেউ খুঁজে পায়না,
সেইসব গোপন চিঠির কথা -
সুবর্ণগন্ধের মেঘ, হাওয়ায় ভেসে যেতো।
শুঁকে দেখো-
পৃথিবী কত বিচিত্র ঘ্রাণের সমাহার,
কখনো কখনো আমাদের উঞ্ছজীবি করে তোলে;
আমাদেরই অহংকারে-
মায়াবন, কাঁঠালিচাঁপার মাতাল হাওয়া
মুনাফার স্বার্থে বিক্রি হয়ে যায়,
বিক্রি হচ্ছে- তৃষ্ণার জল, রোগ-ব্যাধি,
কিশোরীদের অধীর ছায়া, সস্তা শ্রম;
কি হবে যদি না ফেরো তুমি,
হুদাই স্বপ্নে বাঁচা।
পোড়া মাটি, পাথরের গায়ে ফেলে আসা
রেখাগুলো ভালো করে, নতো হয়ে দেখো
কিছু একটা খুঁজে পাবে-
দক্ষিণাচাঁদের কথা, মৌন সন্ধ্যার কথা।
রানা প্লাজার কথা ভাবো-
মানুষ কাতর হলে কিভাবে পরষ্পর জড়িয়ে ধরে, বাঁচে।
হিংসা বাদ দাও, অহংকারগুলো গুটিয়ে ফেলো
দেখবে অনেককিছু সহজ হয়ে আসছে।
প্রেমপত্র লেখার কারণ এখন আর কেউ খুঁজে পায়না,
সেইসব গোপন চিঠির কথা -
সুবর্ণগন্ধের মেঘ, হাওয়ায় ভেসে যেতো।
শুঁকে দেখো-
পৃথিবী কত বিচিত্র ঘ্রাণের সমাহার,
কখনো কখনো আমাদের উঞ্ছজীবি করে তোলে;
আমাদেরই অহংকারে-
মায়াবন, কাঁঠালিচাঁপার মাতাল হাওয়া
মুনাফার স্বার্থে বিক্রি হয়ে যায়,
বিক্রি হচ্ছে- তৃষ্ণার জল, রোগ-ব্যাধি,
কিশোরীদের অধীর ছায়া, সস্তা শ্রম;
কি হবে যদি না ফেরো তুমি,
হুদাই স্বপ্নে বাঁচা।
নমরুদের বাদশাহি
(দিদারকে)
কবে থেকে ঘুমোতে যাবার ভয় আমার,
আচমকা চার চাকার কালো গাড়ি এসে দাঁড়ায়।
চমকে উঠি, হাতড়াতে গিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছিলাম
আধখাওয়া চাঁদ ও বৃষ্টি এসে পড়ে মাথার কাছে;
নমরুদের প্রাসাদ থেকে জারি হওয়া পরোয়ানা-
ধাক্কা খাওয়া সাইকেলও জানেনা কার রোষে পুড়ে যাচ্ছে ...
একই রিলে
ছায়া ও ছবিতে
ছকে ও প্রতিবিধানে
তৈরি করা স্ক্রিপ্ট ও প্রেসনোটে-
ভাবছি যেখান থেকে সবগুলো গ্রামের শুরু
দূরে কোথাও মঞ্জরি নিয়ে দাড়িয়ে থাকলে
বৃষ্টি এসে পড়লেও পতনের শব্দে বেরিয়ে পড়ছি
হত্যাদৃশ্য, একটি মানুষের অপমান,
কবুল করতে
ঢেকে ফেলা হয়েছে পবিত্র সংবিধান।
আমাদের তৈরি হতে হবে প্রত্যাখানের জন্য
আমাদের ফিরে আসার জন্য-
এসে দাঁড়াও, থামাও...
কোথায় গেলো সেইসব জাদু ও পাতা খেলার
লৌকিক মানুষ,
জেগে ওঠো লোকগাঁথা-উপকথা
জীবন্ত মানুষ
ছোঁয়াও হাত, ফুঁ-এ, বান ও মন্ত্রে মিশিয়ে দাও,
টেনে নামিয়ে ফেলো- নমরুদের বাদশাহি...।
লেখক পরিচিতি:
চিনু কবির, কবি ও সম্পাদক। জন্মস্থান ও বেড়ে ওঠা ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী গাইবান্ধা শহরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। সরকারি কলেজে দর্শন বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘসময়। লেখালেখির শুরু হয় ছোটকাগজ দিয়ে। দুই দশক ধরে ছোটকাগজ ক্যাথারসিস [১৯৮৩-২০০৩] সম্পাদনা করেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা: ১. অধিগ্রহণ ও ২. ব্রতলতা [কবি ওয়ালী কিরণ সম্পাদিত ছোট কাগজ ‘ক্রম’: আশির কাগজ]।
লেখক পরিচিতি:
![]() |
চিনু কবির |
0 মন্তব্যসমূহ