করোনা মহামারীর অস্থির সময়ে গত মে-জুন মাসে কথাসাহিত্যিক মেহেদী উল্লাহ তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে সমসময়ের কবি, কথাসাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীগণের সাথে 'হাফ এন আওয়ার চ্যাটিং এবাউট কালচার' (Half an hour chatting about culture) শিরোনামে প্রায় প্রতিদিনই চিন্তামূলক আলাপসমূহ প্রকাশ করেছিলেন, যা সে সময়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে। গতিপথ বাংলা ওয়েবজিনের আলাপ-সিরিজে প্রতি রবিবার মেহেদী উল্লাহ’র হাফ এন আওয়ার চ্যাটিং এবাউট কালচার এর একটি করে পর্ব প্রকাশিত হচ্ছে।
আজ থাকছেন লেখক, প্রাবন্ধিক ও চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু( Bidhan Rebeiro)। সংস্কৃতি নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে—
মেহেদী উল্লাহ : আপনি স্লাভোয় জিজেকের 'পেনডেমিক! দুনিয়া কাঁপানো কোভিড-১৯'— অনুবাদ করছেন। মূল বই হাতে এলো কীভাবে?
বিধান রিবেরু : এই বইটি আসলে মূল লেখক জিজেকের অনুমতি নিয়েই প্রকাশক প্রায় দশ হাজার কপি ই-ভার্সন (যদি ভুল না করে থাকি) বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে। এবং এখান থেকে জিজেক কোন টাকা নেননি। তবে আমার কাছে বইটি এসেছে আমার শিক্ষক সলিমুল্লাহ খানের মাধ্যমে। আমি আগে থেকেই জানতাম বইটি বেরুবে। কারণ সেরকম প্রচারই ছিলো। যেদিন বেরুল, সেদিনই ভাবলাম সংগ্রহ করবো। পরে ই-বুকটি সলিমুল্লাহ খান আমাকে পাঠান। এবং ওদিন সন্ধ্যাতেই আমি সিন্ধান্ত নিয়ে বইটি অনুবাদ শুরু করি।
মেউ : আচ্ছা, ফ্রি দেওয়ার পেছনে প্রকাশকের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে?
বিধান রিবেরু : পুরোটা কিন্তু ফ্রি নয়, প্রথম কয়েক হাজার কপি। আর এর পেছনে উদ্দেশ্য হতে পারে মহামারী সম্পর্কে মানুষকে চিন্তাশীল করে তোলা। তাছাড়া এটির প্রিন্টেড ভার্সনও ফ্রি হবে না।
মেউ : আচ্ছা। আপনি নিজের টাইমলাইনে অনুবাদ শুরু করলেন, দুই কিস্তি প্রকাশও করেছেন। তারপর হঠাৎ সম্ভবত প্রথমা বইটি করতে চাইল, প্রকাশকের অনুমতি নিয়েই, প্রথম আলোতে ছাপাও হচ্ছে এখন। এই যে সোস্যাল মিডিয়ার একটি আইডিয়া মূলধারার গণমাধ্যমে গেল, ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখছেন? এখন যেমন প্রথম আলোর লিংক ফেসবুকে আসে, ব্যাপারটি এর উল্টো দুই কিস্তি ছাড়াও আরো ঘটলে কেমন হত?
বিধান রিবেরু : এই ব্যাপারটি বেশ মজার। বোঝা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এখন জাতীয় গণমাধ্যমকেও আকৃষ্ট করতে পারে। হ্যাঁ উনারা অনুবাদটি কিস্তি আকারে ছাপতে আগ্রহী হলেন এবং সেটি প্রথম থেকেই। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার করি, বইটি কিন্তু প্রথমা প্রকাশ করছে না। বাংলাদেশের আরেকটি বেশ পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী প্রকাশনী বইটি বের করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তারা যোগাযোগও করেছেন আমার সাথে এবং বলেছেন তারা অনুমতি নিয়েছেন প্রকাশক অর বুকসের কাছ থেকে। প্রথম আলোতে শুধু অনুবাদটি কিস্তি আকারে যাচ্ছে। আর এটাও বলি অনুবাদ পুরোটা ছাপা হবে না পত্রিকায়। আমিই দিচ্ছি না। কারণ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখেছি বহু অনুবাদ গোটাটা প্রকাশ হলে অন্যে চুরি করে সেটি নিজের নামে ছাপিয়ে দেয়। তাই বইটির ৫০ শতাংশই কিস্তি আকারে যাচ্ছে প্রথম আলোতে। পুরোটা বইতেই থাকবে। আর গণমাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যমের যে বিষয়টি বলছিলাম, এটাকে আপনি বলতে পারেন যুগ পরিবর্তন। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না এখন ফেসবুকের মাধ্যমেই আরব বসন্ত বা শাহবাগ আন্দোলনের মতো বড় কিছু গড়ে ওঠে।
মেউ : আচ্ছা। প্রথম আলোতে প্রকাশিত হতে দেখে আমি ভেবেছিলাম প্রথমাই সুযোগটি গ্রহণ করছে কি না! যাই হোক, ভিন্ন প্রকাশনী। হ্যাঁ, ফেসবুক এখন শক্তিশালী সামাজিক মাধ্যম, গণমাধ্যম এর কাছে ঋণী হয়ে উঠেছে।
স্লাভয় এবং স্লাভোয়, কোনটি বাংলায় ঠিক?
বিধান রিবেরু : আমার কাছে উচ্চারণটি স্লাভোয় বলেই মনে হয়েছে। আর বিদেশি উচ্চারণে একটু এদিক সেদিক আসলে হতেই পারে। ফরাসি আরের উচ্চারণ এখানে "এখ"ও হয় আবার অনেকে "আর"ও করে। সৈয়দ মুজতবা আলী কিন্তু দুটোকেই অনুমোদন দিয়েছিলেন। কাজেই কেউ যদি স্লাভয় লেখেন তাহলে তাকে ঠিক ভুল বলা যায় না।
মেউ : জিজেক আসলে পৃথিবীব্যাপী নতুন করে কোভিড ১৯ ও মহামারী দর্শন নিয়ে কি বলতে চাচ্ছেন, সংক্ষেপেই যদি বলেন—
বিধান রিবেরু : এক কথায় যদি বলি তো এটাই বলতে হয়, দুনিয়ায় আর আগের মতো কিছু থাকবে না। তো বদলে কি রূপ নেবে দুনিয়া? উনি বলছেন, আপনি যদি এটাকে পরিবর্তিত কমিউনিজম বলেন, তা বলতে পারেন। কারণ এমন মহামারী ও এর ধাক্কা অর্থনীতিতে একা কারো পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। তাই দুনিয়ার দেশগুলোকে সমন্বয় করে এগুতে হবে। স্বাস্থ্য বলি বা অর্থনীতি বলি। শুধু নিজেদেরটা দেখলে হবে না। উনি বলতে চাইছেন মহামারী ছাড়াও আরো অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতি আসলে এমনিতেই অপেক্ষা করে আছে পৃথিবীর জন্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও যদি ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে তাকান তাহলেই সেটা বোঝা যায়। সিরিয়াকে নিয়ে ইউরোপের যে খেলা। অথবা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলি আগ্রাসন। এসব ভেরিয়েবলকে মাথায় নিয়েই জিজেক মনে করেন নতুন ধরনের সমাধানের পথে আমাদের হাঁটতে হবে।
মেউ : কিন্তু, ট্রাম্প তো চীনের সঙ্গে কোভিড ১৯ নিয়েই নতুন দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন। সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থাকেও দুষছেন। এটাকে কীভাবে দেখছেন? নতুন সমাধান ব্যাপারটা কি দর্শনের মতই ভাবা সহজ হবে?
বিধান রিবেরু : দর্শন কিন্তু কোন কিছুর সমাধান দেয় না। দর্শন প্রশ্ন উত্থাপন করে এবং বিদ্যমান অবস্থাকে আরো সমস্যাসঙ্কুল করে তোলে। কাজেই আমি মনে করি জিজেক যা করার চেষ্টা করছেন সেটি বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে উনি চ্যালেঞ্জ করছেন। তাছাড়া এমনিতেও সেটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আপনি জানেন, দুনিয়াতে কোটি কোটি মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এখন ট্রাম্প হলেন চরমপন্থী ধরনের মানুষ, বর্ণবাদী। চীনের প্রতি এটি যে নতুন প্রতিক্রিয়া তা নয়। চীনের প্রতি তাঁর আগের প্রেসিডেন্ট ওবামাও ক্ষিপ্ত ছিলেন। কেন? কারণ চীনের অর্থনীতি উর্ধ্বমুখী। এর কারণ যুক্তরাষ্ট্র যা কিছুই তৈরি করুক না কেন, বিশ্ব বাজারে চীন সেটার কম দামী একটি সংস্করণ ছেড়ে দিয়ে বাজার দখল করে নেয়। এই যে বাজার দখলের খেলা, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র অনেকদিন ধরেই পিছিয়ে পড়া শক্তি। সেই জ্বালা তাদের আছে। বরং এখন করোনার কারণে সেই জ্বালা আরো নগ্ন হয়েছে। আপনি নিশ্চয় দেখেছেন একজন চীনা বংশদ্ভূত সাংবাদিককে কিভাবে অপমান করলেন ট্রাম্প। তিনি নানা সময়ে হুমকি দেন বটে, তবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা কঠিন। কারণ তাদের কংগ্রেস আছে, সিনেট আছে। নিজের দেশে এক ধরনের গণতন্ত্রের চর্চা তারা করে। বাইরে বোমা ফেলার সময় অবশ্য সেই গণতন্ত্র উধাও হয়ে যায়। কাজেই ট্রাম্প যা বলছেন, মনে রাখতে হবে, সেখানে জাতীয় ভোটের রাজনীতিও আছে।
মেউ : সহমত ৷
করোনার কারণে আমরা একে অন্যকে ছুঁতে পারছি না। জিজেক তাঁর বইটির ভূমিকায় এটিকে যিশুকে তাঁর শিষ্য বা ভক্তরা না ছুঁয়ে কীভাবে আধ্যাত্মিক এক চর্চায় পেতে পারে তার সঙ্গে মিলিয়েছেন। ব্যাপারটি ভালো লেগেছে। কিন্তু এই 'ছুঁইয়ো না' ব্যাপারটি ভারতীয় বর্ণবাদে ভিন্নভাবে ছিল, আপনি জানেন এখানে ব্রাহ্মণ্যবাদ ভিন্ন কারণে না তাকে না ছোঁয়ার চর্চায় সামিল ছিল। ব্যাপারটিকে কীভাবে দেখছেন? আমাদের সমাজে যে অস্পৃশ্য দশা ঐতিহাসিকভাবে ছিল ধর্মীয় বা সামাজিক অবস্থানগত কারণে, সেটা এখন একটা মহামারীর কারণে আবার ফিরে এসেছে—
বিধান রিবেরু : যিশু খ্রিস্টকে ছোঁয়া না ছোঁয়ার ব্যাপারটি আসলে বর্ণবাদ নয়। ওটা পুনরুত্থানের পরবর্তী পরিস্থিতি। অর্থাৎ যীশু আর রক্তমাংসের মানুষ নেই। খ্রিস্টিয় এই কাহিনীর মাধ্যমে জিজেক যেটা বলার চেষ্টা করেছেন তা হলো দুই হাজার বছর আগে যেরকম শারীরিক স্পর্শ নয়, আধ্যাত্মিকতার মধ্য দিয়ে একে অপরকে পাওয়ার মেটাফোর এসেছিল, আজ এতবছর পর করোনাকালে সেটি ফিরে এসেছে। জিজেকের রসবোধ দারুণ। উনি বাইবেলের এই ঘটনাকে টেনেছেন বিধায় বলছেন তিনি খ্রিস্টান নাস্তিক। অবশ্য এই এক্সপ্রেশন উনি আরো বহু জায়গাতেই দিয়েছেন। সেটা কথা নয়, কথা হলো যীশু খ্রিস্টের বলা যে বাণী, সেটারই প্রতিধ্বনি যেন জিজেক দেখতে পেয়েছেন। এটা তুলনামাত্র। অন্য কিছু নয়। আর ভারতীয় জাতপাতের ব্যাপারটি একেবারেই আলাদা। বর্ণপ্রথার কথা আমরা সকলেই জানি। ব্রাহ্মণ ছুঁবে না চণ্ডালকে। নিচু জাত বলে। উঁচুনিচু জাতের বিষয়টি এখনো আছে আমাদের উপমহাদেশে। কিন্তু সমস্যা হলো এই করোনা উঁচুনিচু মানছে না। সে গণতান্ত্রিক। জিজেকও তাই বলেছেন বইটিতে। কাজেই রোগের ভয়ে এখন স্বজাতিকেও আপনার ছোঁয়া মানা হয়ে যেতে পারে। এমনকি পরিবারের সদস্যকেও। একদিকে এই রোগ গণতান্ত্রিক অন্যদিকে বড় নিষ্ঠুর।
মেউ : আমি যিশুর এই ব্যাপারটিকেই বুঝিয়েছি, যেটা আপনি এখন বললেন, বা আপনার অনুবাদে আছে বা জিজেক বলেছেন।
চলচ্চিত্র পাঠ ও চলচ্চিত্র বিচার বিষয়ে আপনার বই আছে। আমাদের গণমাধ্যমে সাহিত্য কীভাবে পাঠ করতে হবে এই ব্যাপারটাকে শৈল্পিক জায়গা থেকে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু চলচ্চিত্র নিয়ে যেধরনের রিভিও বিনোদন পাতায় ছাপা হয় সেটাকে নেওয়া হয়েছে গ্ল্যামার ও পুঁজির জায়গা থেকে—একই তো পাঠক, তাহলে সাহিত্য ও সিনেমার ট্রিটমেন্ট ভিন্ন কেন?
বিধান রিবেরু : আসলে এটিকে ভাবতে হবে সেট ও উপসেটের মতো করে। গণিতের ভাষায় বলছি আরকি। ধরুন যে লোক পত্রিকায় চোখ বুলায়, সেই লোক জার্নাল পড়তে পারেন। আবার ধরুন যে জার্নাল বা ছোটকাগজ পড়ে না, সে লোক শুধু পত্রিকাই পড়তে পারে। মানে পত্রিকাকে ভাবতে হয় আম জনতাকে নিয়ে। তাই সে সহজ পথে হাঁটে। যে পথে হাঁটলে খুব সহজেই বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। এখন শিক্ষার সাথে মানুষের রুচি তৈরি হয়। সেই বিচারে রুচি না হওয়ার কারণ আমাদের এখানে শিক্ষা নেই। গবেষণা তো নেইই। যা আছে বিসিএস প্রস্তুতি আর বাজারে যে কর্পোরেট হাউজ আছে সেখানে লোক সাপ্লাই দেয়ার প্রশিক্ষণ। সেটাও ঠিকঠাক হচ্ছে না। দেখুন তো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়টিতে দর্শন পড়ানো হয়? হয় না। কারণ বাজারে যা চলে তাই কোর্স করে গিলিয়ে তারপর সার্টিফিকেট দেয়া হয়। তাছাড়া নৈতিকভাবেই আমরা খুব ভণ্ড ধরনের হয়ে গিয়েছি আগের তুলনায়। ধরুন বাংলা ভাষার কথা। চরম ভণ্ডামি ও হারামিপনা করছি আমরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে ইংরেজির জয়জয়কার। তো এই ভণ্ড ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লোকেরাই তো দেশ চালায়, পত্রিকা চালায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায়। তো এদের কাছ থেকে আর কি আশা করবেন? আমাদের সমাজ তো বাজার দ্বারা নির্ধরিত। তাই পত্রিকার পাতাতেও সেটার প্রতিফলন দেখা যায়। গভীর দৃষ্টি সম্পন্ন লেখাপত্র পড়ার জন্য তো মন তৈরি হওয়া লাগে। সেই মন তৈরি হবে কি করে? ইংরেজি ভাষা থেকে নকল করে জার্নালে প্রবন্ধ ছাপিয়ে পদোন্নতির আশা করে তো সেটা হবে না। মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চাকে গুরুত্ব দিয়েই ওই মন তৈরির কাজ করতে হবে। আমরা যে দিনকে দিন নিহিলিস্টিক হয়ে যাচ্ছি তার লক্ষণটাও ওই ভাষা ব্যবহারে ধরা পড়ে। মানুষ এত দেশ ছাড়তে চায় কেন? দেশের প্রতি দায়বোধ নেই কেন? এগুলো আমাদের ভাবতে হবে। একটি দেশের মাথা যদি ঠিক থাকে, তার উপরের শ্রেণী যদি দায়বোধ করে দেশের প্রতি তাদের অনুসরণ করে গোটা দেশ। কিন্তু আমাদের এখানে এলিট শ্রেণীর স্বপ্নে ইউরোপ আমেরিকা। তারা বিদেশে চিকিৎসা নেয়, বিদেশে ছেলেমেয়েকে পড়তে পাঠায়, বিদেশে বাড়ি কেনে, বিদেশে ব্যবসা ফেঁদে বসে। দেশ কোথায়? দেশ তো একটা ঠেক দেয়ার সাময়িক পাটাতন মাত্র। কাজেই ট্রিটমেন্টের কথা যে বলছেন, এটা ওই কারণেই, কমিটমেন্ট নেই। না ভাষার প্রতি, না শিক্ষার প্রতি, না দেশের প্রতি। আমি একটি অনলাইনে কাজ করতাম। সেখানে সারাদিন শুধু বলিউডের ফালতু বাজে খবর করার দিকেই লোভ ছিলো বেশি। যখনই মননশীল কিছু করতাম নিরুৎসাহিত করা হতো। তো কোথায় যাবেন? হতাশা বোধ কাজ করে। ক্লান্তও লাগে। তবে আমরা আশা ছাড়তে চাই না। আমাদের আগে নিজেদের সাথে নিজেদের বোঝাপড়াটা করে নিতে হবে। তাহলে এই ভণ্ডামির অবসান ঘটবে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে। তখন আর অসুখের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য অন্য দেশের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকতে হবে না।
মেউ : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সময় দেওয়ার জন্য। চলচ্চিত্র নিয়ে সরাসরি কখনো আমাদের সাক্ষাৎ ঘটবে, বিস্তারিত কথা হবে, সেই অপেক্ষায়। সাবধানে থাকবেন, ভালো থাকবেন।
বিধান রিবেরু : আপনাকেও ধন্যবাদ। আমাদের জীবনে আবার আনন্দ বিরাজ করুক।
মেহেদী উল্লাহ বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক। জন্মস্থান নোয়াখালীর সুবর্ণচর, বেড়ে ওঠা চাঁদপুরের কচুয়ায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে বর্তমানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তিরোধানের মুসাবিদা (২০১৪) তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ। তিরোধানের মুসাবিদা গ্রন্থের পান্ডুলিপির জন্য তিনি জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার-২০১৩ অর্জন করেন। প্রকাশিত অন্যান্য গল্পগ্রন্থ: রিসতা (২০১৫), ফারিয়া মুরগীর বাচ্চা গলা টিপে টিপে মারে (২০১৬), জ্বাজ্জলিমান জুদা (২০১৭), অনুমেয় উষ্ণ অনুরাগ (২০১৯)। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস: গোসলের পুকুরসমূহ (২০১৮)। প্রবন্ধ গ্রন্থসমূহ: ফোকলোরের প্রথম পাঠ (২০১৫), ফোকলোর তত্ত্বপ্রয়োগচরিত (২০২০), লোকছড়া: আখ্যানতত্ত্বের আলোকে (২০২০), নজরুল বিষয়ক সংকলন চর্চার ধরন (২০২০)।
0 মন্তব্যসমূহ