bdtime

বঙ্গাব্দ ꘡

শফিক আশরাফের জানালা ꘡ আমাদের ভুটানযাত্রা ꘡ পর্ব-২


শফিক আশরাফ গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। সম্প্রতি প্রথম উপন্যাসের খসড়া করলেন। লেখার টেবিলে বসে উপন্যাস বা গল্প লেখার ফাঁকে ফাঁকে আখ্যান ফুঁড়ে আরও কত শত ভাবনারা বেরিয়ে আসে। ভাবনার আকাশে কল্পনার, অভিজ্ঞতার, আনন্দ-বিষাদের হাজারো ইমেজ উঁকি মারে, দোল খায়--ফের হারিয়েও যায়। টেবিলের ওপারে ছোট্ট জানালা দিয়ে সে আকাশ দেখা যায়। কত্ত বিশাল আকাশের খানিক মাত্র! সেখানে খেলা করে কত রঙ! কত তার রূপ!
প্রিয় পাঠক, চলুন, লেখকের মানসপটে ভেসে থাকা ওই জানালায় আমরাও চোখ রাখি ।
গতিপথ বাংলা ওয়েবজিনে ধারাবাহিক গদ্য শফিক আশরাফের জানালা  শুরু হয়েছে তাঁর ভ্রমণ পর্ব দিয়ে। প্রতি রবিবার নতুন পর্ব পাঠের আমন্ত্রণ।

আমাদের ভুটানযাত্রা: পর্ব-২

ঢাকা থেকে ভোর ছয়টায় এসে রংপুর মর্ডান মোড়ে নামলাম। বাসে হিটার থাকাতে শীত বেশি টের পাইনি। মর্ডানে নেমে বেশ শীত শীত করছিলো। একটা রিক্সা নিয়ে সরাসরি ভার্সিটি ক্যাম্পাসের ডরমিটরিতে চলে আসলাম। আইরিন অপেক্ষা করছিল। ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে একদম রেডি। আমি গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। বাথরুম থেকে বাইরে এসেই দেখি আইরিন দু‘কাপ ধোঁয়া ওঠা গরম গ্রিনটি নিয়ে অপেক্ষা করছে। চা নিয়ে আমরা বারান্দায় বসলাম। ভ্রমণের উত্তেজনায় ও গরম চায়ে আমার জার্নির ক্লান্তি চলে গেল। অনেকদিন ভোরবেলার ক্যাম্পাস দেখা হয় না! শীতের হালকা কুয়াশায়, প্রচুর পাখির কলকাকলিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটাকে অপরূপ মনে হলো। ডরমিটরির সামনে আইরিন ছোট্ট একটা সব্জি বাগান করেছে। সেখানে ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, ফুলকপি, বেগুনের চারা লাগিয়েছে। গাছগুলো বেশ সতেজ হয়েছে। আইরিন সেদিকে তাকিয়ে বললো:
- এই কয়দিনে আমাদের গাছগুলোর কি হবে কে জানে! আমি আশ্বস্ত করলাম,
- শিক্ষার্থী সুজন ও সোহেলকে বলে যাবো, ওরা এসে দেখাশোনা করবে। তারা বেশ দায়িত্বশীল ছেলে। সমস্যা হবে না।
গাড়িকে ফোন দিলাম যেন, সাড়ে সাতটার মধ্যে উপস্থিত থাকে। চা পান শেষে, বাচ্চাদের ঘুম থেকে তুলে কাপড়-চোপড় পরিয়ে রেডি করাতে লাগলাম। এত সকালে কাপড় পরাতে দেখে স্বনন ঘুম জড়িত কণ্ঠে বললো:
- আমাদের তো সমুদ্রে যাওয়ার কথা, আমরা কি আজ সমুদ্রে যাচ্ছি? আমি বললাম,
- না বাবা, আমরা ভুটান যাচ্ছি।
ভুটান যাওয়ার কথা শুনে ও বুঝতে পারছে না, খুশি হবে নাকি মন খারাপ করবে।
আমি উৎসাহিত কণ্ঠে বললাম,
- ইটস আ গ্রেট চান্স! আমরা ভুটানের ভিসা পেয়ে গেছি। আমার উৎসাহ দেখে স্বনন খুশি হয়ে উঠলো। সে খানিকটা ভান করে বলে উঠলো,
- ওয়াও!

নিচে গাড়ির হর্ন বাজছে। বুঝলাম আমাদের কারটা এসে গেছে। বারান্দায় যেয়ে ড্রাইভারকে বলে আসলাম, দশ মিনিট অপেক্ষা করেন, আমরা নামছি। বাচ্চাদের রেডি করে নিচে নামতে বলে আমি পাসপোর্টগুলো গুছিয়ে কাঁধে ঝোলানো ছোট্ট পাসপোর্ট ব্যাগে রাখলাম।

এর আগে মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্যে একবার তামিলনাড়ুতে গিয়ে আমার পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছিলাম। পাসপোর্ট হারিয়ে আমার যে ভয় আতঙ্ক ধরেছিল সেটা বলার মতো নয়! মায়ের চিকিৎসা ফাইলের ভেতর মা ও আমার পাসপোর্ট রেখেছিলাম। ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজের ওপিডি বিল্ডিংয়ের ভেতর ফাইলটা আমার হাতেই ছিল। বোতাম দিয়ে ফাইলের মুখ আটকানোও ছিল। কয়েক জায়গায় মায়ের বিভিন্ন টেস্টের স্যাম্পল দেওয়ার পর ফাইল খুলে পাসপোর্ট চেক করতে গিয়ে দেখি মায়ের পাসপোর্টটা আছে আমারটা নেই! আমার আত্মা ধক করে উঠলো। যেখানে যেখানে স্যাম্পল দিয়েছি প্রত্যেকটা সিকিউরিটি গার্ডের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম সবুজ রঙের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেয়েছে কি না, সবাই পায়নি বলে জানালো। এরপর সিকিউরিটি অফিসে গিয়ে ফোন নম্বর সহ নাম ঠিকানা দিয়ে আসলাম! ওদের ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন অফিসে গিয়ে একই কাজ করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম সন্ধ্যার মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া না গেলে থানায় গিয়ে জিডি করবো। আমার ভয় আতঙ্ক মায়ের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে, দেখতে পাচ্ছি মা-ও বিড়বিড় করে দোয়া করছে । লজে ফিরে এসে আছরের নামাজ পড়ে আল্লা’র কাছে প্রার্থনা করলাম। সারাজীবনের পাপের কথা স্মরণ করলাম, আল্লা’র কাছে মাফ চাইলাম-- পাসপোর্ট ফেরত পেলে ঐ পাপ আর করবো না। নামাজের সালাম ফেরাতেই সিকিউরিটি অফিস থেকে ফোন এলো, আপনার পাসপোর্ট পাওয়া গেছে, এসে নিয়ে যান। সেদিন পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যে আনন্দ পেয়েছিলাম, সেই আনন্দের সঙ্গে অন্য কিছুর আর তুলনা চলে না।
এরপরেই পাসপোর্ট কেরি করার জন্যে আলাদা ব্যাগ কিনি। আজকে ব্যাগে পাসপোর্ট ঢোকাতে গিয়ে মনে হলো, ট্রাভেল ট্যাক্স দেওয়া হয়নি। বর্ডারে গিয়েও দেওয়া যাবে, কিছু বেশি টাকা খরচ হবে ও সময় লাগবে। ব্যাপার না।

সকাল আটটায় আমরা মনের আনন্দে বেরিয়ে পড়লাম।

আমি স্বননকে নিয়ে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছি। স্বনন আমার কোল ছাড়া কোথাও বসবে না। এর আগে দুই বছরের স্বননকে নিয়ে যখন ভারতের হিমাচল প্রদেশ ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন পুরো সময়টাই সে আমার ঘাড়ে বসে ছিল। যেখানেই যাই ও আমার ঘাড়ে বসে থাকবে! ঘাড় থেকে নামালেই বিকট চিৎকার। ওকে ঘাড়ে বহন করতে করতে আমার ঘাড়ই মনে হয় খানিকটা বাঁকা হয়ে গিয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম, ও বড় না হলে আর বেড়াতে বের হবো না। এখন স্বননের পাঁচ বছর। ঘাড় থেকে কোলে নেমেছে। আমার কোল ছাড়া বসবে না! আমি বুঝতে পারছি গোটা ভ্রমণেই ও আমার কোলে থাকবে। কিন্তু কি করবো, আমায় ছাড়া ও থাকতে পারে না। আমাদের গাড়ি হাইওয়ে ধরে পাগলাপীরের দিকে ছুটে চলেছে। সকালের প্রকৃতি বেশ শান্ত ও সিগ্ধ। পাগলাপীর পার হয়ে ভিন্নজগত পিকনিক স্পট বাঁয়ে রেখে গাড়ি যখন তিস্তা ব্যারেজের দিকে মোড় নিলো তখন চমৎকার একটা গ্রামীণ পরিবেশ আমাদের আচ্ছন্ন করলো। ভুট্টা, তামাক ও গম ক্ষেতে গাঢ় সবুজ রং মনটাকে একদম জুড়িয়ে দেয়। ডিসেম্বরের হালকা শীত ও কুয়াশা পরিবেশটাকে আরো মনোরম করে তুলেছে। ভুট্টা ক্ষেতের শীষের উপর বসা বুলবুলি পাখির লাল পুচ্ছ কখনো কখনো আমাদের মনে লাল রঙ ছড়াচ্ছে। পুব আকাশের সূযের্র এক দীপ্তিময় আলো শস্যক্ষেতগুলোর উপর শিহরণ তৈরি করছে । ফিঙেগুলো ফড়িং ধরার জন্যে ওড়াওড়ি করছে। এইসব দেখতে দেখতে আমরা একসময় তিস্তা ব্যারেজের উপর চলে আসলাম। ব্যারেজে প্রবেশের মুখে গাড়ি থামাতে বললাম। গাড়ি থেকে নেমে তিস্তার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল আমাদের আচ্ছন্ন করলো। ধবধবে সাদা বালি, মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ পানির প্রবাহ এক নৈসর্গিক দৃশ্য তৈরি করেছে। হাতের ডানে একটা রিসোর্ট মতো আছে, সেখানে ওয়াশরুমের কাজটা সেরে ভাসমান চা ওয়ালার নিকট থেকে দুজনে দু’কাপ চা খেলাম। চা খেতে খেতে জেলেদের নৌকায় মাছ ধরার দৃশ্য দেখলাম, আর যেটা আমাদের আকৃষ্ট করলো সেটা অসংখ্য পানকৌড়ি আর সাদা বকের ধ্যানস্থ মূর্তি। সেটা দেখে আমার মনে পড়ে গেল এক অখ্যাত বাউলের গানের কয়েকটি চরণ--
যদি মন মানুষ ধরতে চাও,
জিগাগাছের আঠা দিয়া নলাগা বসাও।
আখি নড়লে পাখি নড়ে পলক দেয় না নয়নে, মানুষ যেখানে
বগায় যখন মাছ ধরিতে যায় ঐ নদীর কিনারায়
নলের আগার নল বসাইয়া এক ধ্যায়ানে চায়। 
বকের ধ্যানস্থ মূর্তি যতবার দেখি ততবার আমার এই গানের কথা মনে পড়ে। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা লাঙ্গুলিয়া নদীর ধারে। ছোটবেলার বকের ধ্যানীমূর্তি দেখে কতবার যে আমার বক হতে ইচ্ছে করেছে কাউকে সেটা বলিনি, কিন্তু বকের ধ্যানীমূর্তি তো দূরে জীবনের অস্থিরতাই তো দূর হলো না।

চা পান শেষে আমরা চলে আসলাম একেবারে বুড়িমারি বর্ডার।

তখন সকাল সাড়ে দশটা বাজে। বুড়িমারিতে আমাদের জন্যে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল বাবলু। বাবলু হলো বর্ডারের এপারের অংশে পারপারের সহায়তাকারী, সরল বাংলায় যাকে বলি দালাল। ওর হাতে পাসপোর্ট তুলে দিলে ইমিগ্রেশনের সব কাজ কমপ্লিট করে এনে দেবে। নিজেও এসব কাজ করা যায়, ইমিগ্রেশন ফরম পূরণ করা, ট্রাভেল ট্যাক্স দেওয়া, এরপর লাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও পাসপোর্টে এক্সিট সিল নেওয়া ইত্যাদি কাজে বেশ সময় লাগে। আর দালালের হাতে পাসপোর্ট ধরিয়ে দিলে সব কাজ অল্প সময়ের মধ্যেই করে দেয়। পাসপোর্ট প্রতি দেড়শ/দুইশ টাকা হয়তো দিতে হয়। বাবলু এর আগে আমাকে অনেকবার একাজে সহায়তা করেছে। পাসপোর্ট হাতে পেয়ে বাবলু বললো:
- স্যার, ট্রাভেলট্যাক্স?
- ওটা এবার রংপুর থেকে করে আনিনি। তুমি এখানে দেওয়ার ব্যবস্থা কর। এ বলে দুই হাজার টাকা বের করে বাবলুর হাতে দিলাম।
- স্যার আরো পঞ্চাশ করে অতিরিক্ত লাগবে, ব্যাংক খানিকটা দূরে। আরো দু’শ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,
- বেশি দেরি হবে কি?
- ট্র্যাভেলট্যাক্সের জন্যে একটু সময় লাগবে, আপনারা ভিতরে গিয়ে বসুন।
- ঠিক আছে, তুমি একটু তাড়াতাড়ি করো, আমরা বাইরে চা নাস্তা খাচ্ছি।
বাবলুকে বিদায় দিয়ে আমরা বর্ডারের সামনে একটা ভাঙা মতো রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। সকালে রওনা দিয়েছি, চা-বিস্কিট ছাড়া আর কোন নাস্তা করা হয়নি। বেশ ক্ষুধা টের পাচ্ছিলাম। সেখানে গরম গরম পরোটা ভাজছে। বুনন বললো, সে পরোটা নয়, ডিম-খিচুড়ি খাবে। বুননের জন্যে ডিম খিচুড়ি আর আমরা ডিম পরোটা আর ডাল দিয়ে নাস্তা করলাম। এখানকার সব রেস্টুরেন্টই ভাঙাচুরা, তবে রেস্টুরেন্টের ভেতরে একটা করে টিউবওয়েল পোতা, ফলে ফ্রেশ জল পাওয়া যায়। এদের লিকার চা-টা তিতকুটে। আগে থেকেই চায়ের পাতি জ্বাল করতে থাকে। আমরা দুধ চা খেলাম। চা পান করে বাইরে আসতেই দেখি বাবলু হাজির। বললো,
- স্যার ভেতরে চলেন, ছবি উঠাতে হবে।
- হয়ে গেল এত তাড়াতাড়ি!
সবাইকে নিয়ে বাবলুর সঙ্গে ইমিগ্রেশন অফিসের ভেতরে প্রবেশ করলাম। এখানে সকাল সকাল বেশ ভীড় হয়। ঢাকা থেকে ভারত, নেপাল, ভুটানগামি যাত্রীদের লম্বা লাইন হয়। তবে আজকে ভীড় খানিকটা পাতলা। ইমিগ্রেশন অফিসার আগে স্বননের নাম ধরে ডাকলো। স্বননকে নিয়ে আমি সামনে গেলাম। তিনি স্বননকে জিজ্ঞাসা করলেন:
- কোথায় যাবে তুমি বাবু? স্বনন চটপট উত্তর করলো,
- ভুটান যাবো, তোমার জন্যে কিছু আনতে হবে? স্বননের কথা শুনে ইমিগ্রেশন অফিসার বেশ মজা পেল। বললো,
- বলো তো কি আনবে আমার জন্যে? স্বনন আবার বুদ্ধি করে উত্তর দিলো,
- ভুটানের কুকুর নাকি অনেক ভালো, একটা কুকুর আনবো? এর আগে আমরা ইন্টারনেটে ছোট্ট ছোট্ট ভুটানি কুকুর দেখেছিলাম। স্বনন ওর মাকে বলেছিল আমরা ভুটান থেকে একটা কুকুর আনবো। ওর মা স্বননকে ধমক দিয়ে বলেছিল, ‘বাসায় কোন কুকুর আসলে ওই কুকুর নিয়েই তোদের থাকতে হবে, আমি থাকবো না, বেছে নাও কুকুর, না হয় আমি!’ এরপর থেকে সে আর কুকুর নিয়ে কিছু বলেনি। আজ হঠাৎ ইমিগ্রেশন অফিসারকে কুকুরের কথা বলাতে আমরা বেশ অবাক হলাম। কিন্তু ইমিগ্রেশন অফিসার হাসতে হাসতে বললো,
- থাক বাবা, আমার জন্যে কুকুর আনতে হবে না, তোমরা ঘুরে আসো।
ইমিগ্রেশনে আমাদের ফটো তোলা হয়ে গেলে ভারতের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। একটা লাগেজ বাবলু টানছে, আরেকটা আমার হাতে। বাংলাদেশের কাস্টমস অফিসার বাবলুর পরিচিত, ও কানে কানে কি বলাতে আমাদের লাগেজ আর চেক করলো না। আমরা জিরো পয়েন্ট ছাড়িয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখলাম।

[চলবে..]





সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচিতি:
শফিক আশরাফ (জন্ম: ৬ আগষ্ট ১৯৭১)
শফিক আশরাফ গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। জন্মস্থান টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার অন্তর্ভুক্ত সিঙ্গাইর গ্রামে। বর্তমানে রংপুরে বসবাস করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বিভিন্ন লিটলম্যাগে লেখালেখির শুরু। ২০০০ সালে তিনি ও বন্ধু কবি শামীম নওরোজ এবং ফারুক আকন্দ মিলে অন্যতম ছোটকাগজ ‘চিহ্ন’ প্রথম বের করেন। পরবর্তী সময়ে ‘চিহ্ন’ সম্পাদক এবং আরো পরে প্রখ্যাত সাহিত্যিক শিমুল মাহমুদ সম্পাদিত ছোটকাগজ ‘কারুজ’ এর সহযোগী সম্পাদক ছিলেন। ছোটকাগজ অন্বীক্ষা, লোকপত্র, মাটি, প্রকৃতি -তে তিনি নিয়মিত লিখেছেন।
তাঁর প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘নহর আলীর মা’ (১৯৯৯)। দীর্ঘ সময়ে তিনি বেশকিছু গল্প লিখেছেন।চন্দন আনোয়ার সম্পাদিত গল্প পঞ্চাশৎ, রাশেদ রহমান সম্পাদিত এই সময়ের নির্বাচিত ছোটগল্প প্রভৃতি সংকলনে তাঁর গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তাঁতি সম্প্রদায়কে নিয়ে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘পাউঠি’র খসড়া সম্প্রতি শেষ হয়েছে। প্রকাশিতব্য গল্পগ্রন্থ ‘পাগল অথবা প্রত্যাশিত মৃত্যু’।   
প্রকাশিত গবেষণাগ্রন্থ: বাংলাদেশের গ্রাম ভিত্তিক ছোটগল্পে জীবন, সমাজ ও সংস্কৃতি ১৯৪৭-২০০০ (প্রকাশকাল ২০১৩); প্রবন্ধ-গ্রন্থ: সিনেমা ও সাহিত্য প্রাসঙ্গিক পাঠ (২০২০)।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ