bdtime

বঙ্গাব্দ ꘡

শফিক আশরাফের জানালা ꘡ আমাদের ভুটানযাত্রা ꘡ পর্ব-৪

শফিক আশরাফ গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। সম্প্রতি প্রথম উপন্যাসের খসড়া করলেন। লেখার টেবিলে বসে উপন্যাস বা গল্প লেখার ফাঁকে ফাঁকে আখ্যান ফুঁড়ে আরও কত শত ভাবনারা বেরিয়ে আসে। ভাবনার আকাশে কল্পনার, অভিজ্ঞতার, আনন্দ-বিষাদের হাজারো ইমেজ উঁকি মারে, দোল খায়--ফের হারিয়েও যায়। টেবিলের ওপারে ছোট্ট জানালা দিয়ে সে আকাশ দেখা যায়। কত্ত বিশাল আকাশের খানিক মাত্র! সেখানে খেলা করে কত রঙ! কত তার রূপ!
প্রিয় পাঠক, চলুন, লেখকের মানসপটে ভেসে থাকা ওই জানালায় আমরাও চোখ রাখি ।
গতিপথ বাংলা ওয়েবজিনে ধারাবাহিক গদ্য শফিক আশরাফের জানালা  শুরু হয়েছে তাঁর ভ্রমণ পর্ব দিয়ে। প্রতি রবিবার নতুন পর্ব পাঠের আমন্ত্রণ।

আমাদের ভুটানযাত্রা: পর্ব-৪

হোটেলের লোকজন আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল। আমাদের ডাকাডাকিতে স্বনন-বুনন ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। হোটেলের লোকজন লাগেজপত্র টেনে গাড়ি থেকে নামালো। বেশ বড় হোটেল। রিসেপশনের সামনে চামড়ায় মোড়া সোফার উপর উঠে স্বনন দুটো লাফ মেরে ঘুম কাটালো। আমি ড্রাইভার সুপোকে বিদায় করে রিসেপশনে পাসপোর্টগুলো দিয়ে বললাম:
- আপনারা ফর্মালিটিসগুলো সেরে নেন, আমরা খুবই টায়ার্ড, রুমে রেস্ট নেব। আর এখানে কি রাতের খাবার পাওয়া যাবে? রিসেপশনিস্ট জানালো, 
- শুধু রুটি, সব্জি, ডাল হবে, রুমে খাবার পাঠাবো?
- হ্যাঁ, তিনজনের খাবার রুমে পাঠিয়ে দেন। 
হোটেলের বেয়ারার সঙ্গে আমরা লিফটে তিন তলায় চলে আসলাম। হোটেলের রুম দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল। বেশ বড় একটা ডিলাক্স রুম। সোফা, টিভি, টেলিফোন সবই আছে। ধবধবে সাদা বিছানা, বালিশ। মেঝে ও দেয়াল কাঠের কাজে সজ্জিত। সোফার টেবিলে চকলেট, চিপস, টিব্যাগ, টিপট সাজানো। বেয়ারা গরম পানির সুইস অন করে দিয়ে গেল। স্বনন ঠোঙা ছিঁড়ে চিপস খেতে খেতে টিভি নিয়ে খোঁচাখুঁচি করছে। 
স্বনন পেছন থেকে বেয়ারাকে ডেকে হিন্দিতে বলার চেষ্টা করলো:
থিম্পুতে প্রথম হোটেল কক্ষে লেখকের সাথে স্বনন ও বুনন

- হেই মিস্টার! কার্টুন চ্যানেল অন করদো। 
বেয়ারা স্বননকে ডিজন্যাপ কার্টুন চ্যানেলে ডোরেমন চালিয়ে দিলো। বাংলাদেশের চ্যানেলে ডোরেমন কার্টুন বন্ধ হওয়াতে ছেলে-মেয়েদের এই চ্যানেলে আকর্ষণ বেড়েছে। বুনন বললো,
- চল, সিআইডি দেখি।
- না ডোরেমন দেখবো। এই চ্যানেল দেখা নিয়ে দুজনের মধ্যে খানিকটা ঝগড়া হয়ে গেল। ওর মায়ের ধমকে ব্যাপারটা আপাতত মিটমাট হলো। দু’জনে ডোরেমনই দেখছে। আমি কাপড় চেঞ্জ করে বাথরুমে ঢুকলাম। আইরিন লাগেজ থেকে দরকারি জিনিসপত্র বের করছে। গরম পানিতে পুরো দশ মিনিট ধরে একটা হট শাওয়ার নিলাম। একেবারে চাঙ্গা হয়ে বাথরুম থেকে বেরুলাম। এতক্ষনে ক্ষুধায় পেট চনচন করছে। আইরিনকে বললাম:
- তুমি গরম পানিতে গোসল দিয়ে নাও, ফ্রেস লাগবে।
- না, এতরাতে গোসল দেব না, শুধু হাতমুখ ধোব। 
আইরিন হাতমুখ ধুয়ে বের হতে হতেই আমাদের খাবার চলে আসলো। সঙ্গে করে নিয়ে আসা একটা ত্রিপল মেঝেতে বিছিয়ে চার জন গোল হয়ে খেতে বসলাম। খেতে খেতে আইরিন বললো:
- তুমি সকালে আরেকটা হোটেল খোঁজ তো, এটার ভাড়া তো অনেক! আমি বললাম,
- এটা একদিনের জন্যেই বুক করা, তোমাকে নিয়েই না হয় বের হবো।
- বাচ্চাদের রুমে রেখে গেলে আবার কোন অসুবিধা হবে না তো?
- সেটা হওয়ার কথা নয়, আর টিভি আছে, ওদের কোন সমস্যা হবে না।
সকালে সূর্যের প্রথম রশ্মি আমার মুখে লাগতেই ঘুম ভেঙে গেল। পর্দার ফাঁক দিয়ে সোনারঙা আলো কক্ষে প্রবেশ করেছে। সকালের এই সোনারঙটা বেশিক্ষণ থাকে না। স্বনন আমাকে জড়িয়ে ধরে শোয়। ওর হাতটা আলতো সরিয়ে আমি চটপট বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকিয়ে সৌন্দর্যের ধাক্কায় চোখমুখ উদ্ভাসিত হলো। আগুনরঙা সূর্যটা পাহাড়ের মাথায় চড়ে বসে আছে। সারারাত হালকা তুষারপাত হয়েছে। রাস্তায়, গাছের পাতায় তুষারের আস্তরণ। পাহাড়ের মাথায় কোথাও কোথাও সাদা বরফ উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। সূর্যের প্রথম আভায় সেই বরফগুলো এত চমৎকার লাগছে- মনে হচ্ছে, বুকের ভেতর সুন্দর ধাক্কা দিচ্ছে। এই সৌন্দর্য একা একা উপভোগ করা যায় না! আমি আইরিনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললাম। বললাম:

- আসো তাড়াতাড়ি! এই সুন্দর একটু পরেই মিলিয়ে যাবে। আইরিন উঠে জানালায় দাঁড়িয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়লো। এখনও গোটা শহর ঘুমে। এখানকার গাছপালা ঘরবাড়ি সবই অন্যরকম, এমনকি পাখিও। আমি দোয়েলের মতো একটা পাখি লক্ষ্য করলাম কিন্তু তার লেজটা অনেক লম্বা। তীক্ষ্ণ শব্দে শিশ দিচ্ছিলো। আইরিন আমার হাত ধরে বললো:

- তাহলে শেষ পর্যন্ত হলো আমাদের ভুটান আগমন!
- তাইতো মনে হচ্ছে।
- আসো চিমটি কেটে দেখি, এই সুন্দর সত্যি কি না! বলে আইরিন আমাকে চিমটি কাটলো। দেখতে দেখতে সকালের কোমল আলো মিলিয়ে রোদ তীব্র হয়ে উঠতে লাগলো। আইরিন বললো,
- দাঁড়াও, রাইসকুকারটা বের করে খিচুড়ি বসিয়ে দেই। আমি বললাম,
- আরে এত তাড়াহুড়ার কি আছে! রিলাক্স। আসো আগে দুজনে দুকাপ চা খেয়ে নিই। আমি চা বানাই, তুমি সোফায় বসো। রূমে ওয়াটার জগ, টিব্যাগ, সুগার সব রেডি করাই ছিল। আমি ওয়াটার জগে গরম পানি তুলে দিলাম। পাহাড়ের দিকে, বরফের দিকে মুখ করে বসে দু’জনে চা পান করছি। গতকাল সকালে রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ডরমিটরির বারান্দায় বসে দু’জনে একসঙ্গে চা খেয়েছি। আর আজ কোথায়, কোন সুদূর ভুটানের থিম্পু শহরের হোটেলে বসে সুইচ্চ পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চা খাচ্ছি। মনে হচ্ছে, মানুষের স্বপ্ন ও বাস্তবতা খুব কাছাকাছি অবস্থান করে, শুধু হাত বাড়িয়ে ধরতে পারলেই হয়। এই হোটেল কক্ষ, এই পাহাড়, এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মনে হলো-আমরা স্বপ্নের ভেতরই আছি। 
হোটেলের জানালা দিয়ে দেখা সকালের থিম্পু
রোদের তেজের সঙ্গে সঙ্গে শীতও অনেকখানি কেটে গেল। আইরিন রাইসকুকারে খিঁচুড়ি তুলে দিয়ে বাথরুমে ফ্রেস হতে গেল। আমি বাচ্চাদের ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। বুনন যেকোন ছুটির দিনে সকাল দশটা এগারোটা পর্যন্ত ঘুমায়। আজ নতুন জায়গায়, নতুন পরিবেশে এক ডাকেই ঘুম থেকে উঠলো। উঠেই প্রথমে জিজ্ঞাসা করলো:
- আমরা কোথায় আছি? আমি বললাম,
- উঠে জানালা দিয়ে দেখ, কোথায় আছো। বিছানায় শুয়েই পাহাড় দেখে বুনন, ওয়াও বলে বিছানা ছেড়ে উঠে জানালায় চলে আসলো। অচেনা গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো:
- ও গুলো কী গাছ বাবা? 
- ডাল মেলে আছে যেগুলো সেটা খ্রিসমাসট্রি আর লম্বাগুলো পাইনগাছ মা। 
- আমাদের দেশে তো এই গাছ নাই বাবা?
- খ্রিসমাসট্রি দুএকটা হয়তো আমাদের ক্যাম্পাসেও আছে আর পাহাড়ি অঞ্চলে আছে পাইনগাছ, তবে কম, এই জন্যেই চেন না। বাচ্চাদের আগ্রহ আনন্দ দেখে আমার ভালো লাগলো। বুননকে বললাম:
- এখন তোমরা ছোট, আমরা তোমাদের বেড়াতে নিয়ে এসেছি, আমরা যখন বুড়ো হবো তখন তোমরা আমাদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেড়াতে নিয়ে যাবে, ঠিক আছে? স্বনন বলে উঠলো:
- বুনন নিয়ে যাবে না বাবা ও স্বার্থপর, আমি নিয়ে যাবো। স্বননের কথা শুনে আমি হাসলাম। বুননকে একটু বেশি আদর করলেই ওর খানিকটা হিংসা হয়।


সকালের নাস্তা শেষে বাচ্চাদের রুমে রেখেই আইরিন আর আমি বেরিয়ে পড়লাম। হোটেলের রিসেপশন থেকে পাসপোর্টগুলো সংগ্রহের সময় জিজ্ঞাসা করলো, আমরা বারোটার মধ্যে চেক-আউট হবো কি না? জানালাম, বাইরে থেকে এসে জানাবো। আমরা যেখানে আছি সেটা হোটেল এরিয়া। হোটেল থেকে বাইরে বেরিয়ে আশপাশে অনেক হোটেল দেখলাম। তবে নির্জন, শান্ত 
হোটেলের জানালা দিয়ে বাইরের থিম্পু
পরিবেশ। রাস্তা ধরে নিচে নামলে ক্লক-টাওয়ার, উপরে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি সহ বিভিন্ন অফিস ও হোটেল। আমরা উপরে উঠতে লাগলাম। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ঘরবাড়ি। ভুটানিদের আবাসিক বাড়িগুলো পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি। প্রত্যেকটা বাড়ির সামনে ফুলের বাগান, আর বাগান করার জায়গা না-থাকলেও বিভিন্ন রঙিন ফুলে টবে টবে ফুটে আছে। রাস্তায় ভুটানি তরুণ-তরুণি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যে কয়জনের সঙ্গে দেখা হলো, তাদের দেখে মনে হলো সকলে খুব প্রশান্তচিত্তে আছে। এই অন্তরের প্রশান্তির ছায়া তাদের চেহারায় ফুটে উঠেছে। আমরা কিছুটা উপরে উঠতেই চমৎকার লনওয়ালা একটা হোটেল দেখতে পেলাম। আইরিনকে নিয়ে হোটেলটাতে প্রবেশ করলাম। হোটেলের রিসেপশনে এক সুন্দরী তরুণী বসে আছে। আমাদের দেখে উঠে দাঁড়িয়ে গুডমর্নিং জানালো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম:

- রুম হবে?
- আপনারা কয়জন?
- বাচ্চা সহ চারজন, একটা বড় ডিলাক্স রুম হলেই চলবে।
- রুম হবে, বলে একজন বেয়ারার হাতে চাবি দিয়ে আমাদের রুম দেখতে বললো।
তিন তলার উপরে বেশ বড়, খোলামেলা চমৎকার রুম আমাদের দেখালো। যেটা ভালো লাগলো রুমের লাগোয়া একটা বারান্দা। বারান্দায় দাঁড়ালে পাহাড় ও মেঘের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। আইরিন আস্তে আস্তে আমাকে বললো:
- যে হাইফাই রুম, ভাড়া অনেক হবে।
- চলো নিচে যাই, দেখা যাক।
রিসেপশনের তরুণীকে বললাম:
- রুম আমাদের পছন্দ হয়েছে। ভাড়া কত? তরুণী উত্তর দিলো,
- এখন টুরিস্ট কম, আমাদের হোটেলে ডিসকাউন্ট অফার চলছে। ওই রুমের ভাড়া এমনিতেই চার হাজার, এখন ফিফটিপার্সেন্ট কমিশনে দু’হাজার পড়বে পার-নাইট। তোমরা কয়দিন থাকবে?
- মিনিমাম তিনদিন।
- তিনদিন যদি থাকো, তাহলে আর অন্যকোন চার্জ বা ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হবে না, সব আমরা দেব।
- ঠিক আছে আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি, তোমরা রুমটা গুছিয়ে রেখ।


যে হোটেলে উঠেছি সেটার ভাড়া সাড়ে তিন হাজার রুপি, আর এটা সেটার চেয়েও ভালো ও খোলামেলা। আমরা কিছু টাকা অ্যাডভান্স করে আগের হোটেলে ফিরে এসে জানালাম, আমরা এখনই চেক আউট হবো। রুমে এসে চটপট ব্যাগ গুছিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে নিচে নেমে আসলাম। হোটেল পেমেন্ট কমপ্লিট করতে করতেই হোটেলে লোকজন ব্যাগেজ নিয়ে নামিয়ে আনলো। ব্যাগ বাইরে এনে একজন জিজ্ঞাসা করলো: 

- আপনাদের গাড়ি কোথায়? আমি জবাব দিলাম, 

- আমাদের গাড়ি নেই, আমরা সামনে আরেকটা হোটেলে উঠছি। 
- ও আচ্ছা, থ্যাংক ইউ স্যার। বলে আমাদের বিদায় দিলো। ভুটানিদের ভদ্র বিনয়ী আচরণ আমাদের ভালো লাগছে।
আমরা ট্রলি ব্যাগের হ্যান্ডেল ধরে টেনে টেনে নতুন হোটেল নিয়ে আসলাম। এমনিতেই পাহাড়ের উপরে উঠতে হাফ ধরে যায়, তারমধ্যে ব্যাগ টেনে আনা খানিকটা কষ্টের। রাস্তার মাঝে কয়েকবার স্বনন আমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ব্যাগ টানার চেষ্টা করেছে। আমি ওকে বললাম:
- তুমি তোমার আম্মুর লাগেজটা নিচ থেকে ঠেল, মজা হবে। ও তাই করা শুরু করলো। রাস্তা অল্পই। আমাদের নতুন রুমটা বাচ্চাদের খুব পছন্দ হলো। খোলামেলা ও প্রচুর আলো। বিছানায় শুয়েও জানালা দিয়ে আকাশ ও পাহাড় দেখা যায়। রুমের বারান্দায় গিয়ে বুনন চিৎকার করে বলছে:
- বাবা, নিচে একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট দেখা যাচ্ছে। আজ দুপুরে আমরা ওখানে খাবো। আমি বারান্দায় গিয়ে চাইনিজ খাবার রেস্তরা লক্ষ্য করলাম। বেশ পরিপাটি রেস্টুরেন্ট, বাইরে একটা লনের মতো, সেখানে চেয়ারপাতা। কয়েকজন বিদেশি বসে বসে কি খাচ্ছে আর হাত নাড়িয়ে আড্ডা মারছে। সেসব দেখতে দেখতে আমি বললাম,
- ভুটানে এসে ভুটানি খাবার খাই, চাইনিজ খাবার কেন? আইরিন এসে বুননকে সাপোর্ট করে বললো,
- ভুটানি খাবার অনেকবার খাওয়া যাবে, বাচ্চারা খেতে চাচ্ছে, চলো ভুটানের চাইনিজ খাই। অগত্যা রাজি হয়ে বললাম:
- ঠিক আছে, তোমাদের ইচ্ছেই আমার ইচ্ছে। দুপুরে হবে। এখন তাড়াতাড়ি রেডি হও, আজকে থিম্পু শহর হেঁটে হেঁটে দেখবো। অন্য কোনও সাইটসিইং হবে না। পুরো রিল্যাক্স। 


আমরা থিম্পু শহর দেখার উদ্দেশ্যে হোটেল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসলাম।



শফিক আশরাফ (জন্ম: ৬ আগষ্ট ১৯৭১)
শফিক আশরাফ গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। জন্মস্থান টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার অন্তর্ভুক্ত সিঙ্গাইর গ্রামে। বর্তমানে রংপুরে বসবাস করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বিভিন্ন লিটলম্যাগে লেখালেখির শুরু। ২০০০ সালে তিনি ও বন্ধু কবি শামীম নওরোজ এবং ফারুক আকন্দ মিলে অন্যতম ছোটকাগজ ‘চিহ্ন’ প্রথম বের করেন। পরবর্তী সময়ে ‘চিহ্ন’ সম্পাদক এবং আরো পরে প্রখ্যাত সাহিত্যিক শিমুল মাহমুদ সম্পাদিত ছোটকাগজ ‘কারুজ’ এর সহযোগী সম্পাদক ছিলেন। ছোটকাগজ অন্বীক্ষা, লোকপত্র, মাটি, প্রকৃতি -তে তিনি নিয়মিত লিখেছেন।

তাঁর প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘নহর আলীর মা’ (১৯৯৯)। দীর্ঘ সময়ে তিনি বেশকিছু গল্প লিখেছেন।চন্দন আনোয়ার সম্পাদিত গল্প পঞ্চাশৎ, রাশেদ রহমান সম্পাদিত এই সময়ের নির্বাচিত ছোটগল্প প্রভৃতি সংকলনে তাঁর গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তাঁতি সম্প্রদায়কে নিয়ে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘পাউঠি’র খসড়া সম্প্রতি শেষ হয়েছে। প্রকাশিতব্য গল্পগ্রন্থ ‘পাগল অথবা প্রত্যাশিত মৃত্যু’।   

প্রকাশিত গবেষণাগ্রন্থ: বাংলাদেশের গ্রাম ভিত্তিক ছোটগল্পে জীবন, সমাজ ও সংস্কৃতি ১৯৪৭-২০০০ (প্রকাশকাল ২০১৩); প্রবন্ধ-গ্রন্থ: সিনেমা ও সাহিত্য প্রাসঙ্গিক পাঠ (২০২০)।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ